মার্চ ২২, ২০১১

ভ্যান টেনে সংসার চালায় ৪র্থ শ্রেণীর ছাত্রী শাকিলা



১১ বছর বয়সী শাকিলা আক্তার আটোয়ারী উপজেলার পটেশ্বরী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪র্থ শ্রেণীর ছাত্রী। বাবা মনির হোসেন (৪০) পেশায় ভ্যান চালক। শাকিলা ৪ ভাই-বোনের মধ্যে সবার বড়। ছোট বোন শখি আক্তার (৬) ১ম শ্রেণীতে পড়ে। অপর ছোট বোন রূপালী বয়স ৪ আর একমাত্র আদরের ভাই নয়ন মিয়ার বয়স ২ বছর। ৬ সদস্যের পরিবারে আয়ের একমাত্র উৎস বাবার তিন চাকার যান (ভ্যান)। ভ্যানের চাকা ঘুরলে চুলোয় হাঁড়ি চড়ে। অন্যথায় উপোস থাকতে হয় পরিবারের সবাইকে। ২০ মার্চ বিকালে দেখা যায় ৪ জন যাত্রী নিয়ে হাঁপিয়ে হাঁপিয়ে ভ্যান চালিয়ে আসছে ছোট্ট একটি মেয়ে। উপজেলা পরিষদ মার্কেটের সামনে ভ্যান থামিয়ে কথা হয় শাকিলার সাথে। শাকিলা জানায়, ভ্যানের যাত্রীরা আর কেউ নয়- তার মা আর ৩ ভাই-বোন। বাবা অসুস্থ হাসপাতালে চিকিৎসায় রয়েছে।

কথা হয় শাকিলার মা জহুরা খাতুনের সাথে। ভাইয়ে ভাইয়ে মারামারি করে ৬/৭ দিন যাবৎ স্বামী (মনির) হাসপাতালে। ৪ শিশু সন্তান নিয়ে মহাবিপাকে। স্বামীর ওষুধের টাকা যোগাড় করতে পারছেন না। সন্তানদের মুখে খাবার তুলে দেয়ার সামর্থ্য তার নেই। বাসা-বাড়িসহ মাঠে কাজ করতে চাই। কিন্তু কোলে ছোট্ট শিশু তাই কেউ কাজে নিতে চায় না। এ সময় সংসারের হাল ধরে বড় মেয়ে শাকিলা। স্কুল ছুটির পর পিতার পড়ে থাকা ভ্যান নিয়ে বেরিয়ে পড়ে সে। দু'-একজন যাত্রী নিয়ে আশপাশে পেঁৗছে দেয়। এতে সামান্য টাকা রোজগার হয় তাই দিয়ে কোনমতে তাদের সংসার চলে যাচ্ছে। শাকিলা জানায়, ভ্যান চালানোর কোন ইচ্ছে তার নেই। কিন্তু ছোট ছোট ভাই-বোনদের মুখের দিকে চেয়ে সে অসাধ্য এই কাজটি করে যাচ্ছে। স্কুল ছুটির পর বাড়ি ফিরেই ভ্যান নিয়ে বেরিয়ে পড়ে সে। সন্ধ্যা পর্যন্ত ৩০/৩৫ টাকা আয় হয়। সে টাকা দিয়ে কোনমতে কেজিখানেক চাল নিয়ে বাড়ি ফিরে সে।

ফেব্রুয়ারী ০৮, ২০১১

ফুলের চাষে ভাগ্য বদলেছেন শতাধিক কৃষক



চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলায় ফুল চাষের ব্যাপক প্রসার ঘটেছে। গত প্রায় ১৫ বছর ধরে এ উপজেলায় ফুলের চাষ হচ্ছে। গাঁদা, রজনীগন্ধা, চেরী, জিপসি ফুলের চাষ হয় এ উপগেলায়। তবে গাঁদা ফুলের চাষই হচ্ছে বেশী। জীবননগর উপজেলায় এখন প্রায় ৩ শতাধিক চাষী ফুলের চাষের সাথে জড়িত। এদের বেশীর ভাগই সফলতা অর্জন করেছেন। ফুল চাষীদের একটি সমিতিও রয়েছে এই গ্রামে। এই সমিতি ভারত থেকে চোরাই পথে আসা ফুল প্রতিরোধসহ ফুল চাষীদের স্বার্থ সংস্লিষ্ট বিষয়াদি দেখাশুনা করে। জীবননগরের ফুল ঢাকা ও চট্টগ্রামসহ দেশের অন্যান্য স্থানের ফুলের চাহিদা অনেকখানি পুরন করে থাকে।

অক্টোবর ৩১, ২০১০

আমঝুপি কুঠি

নদীর নামটি খুব সুন্দর। কাজলা। তার উত্তর পাড়ে ৭৭ একর জায়গাজুড়ে বিশাল এক আমবাগান। আকার-আয়তন যেমন বড়, বয়সেও তেমনি পুরোনো। অন্তত সাড়ে ৩০০ বছর তো হবেই। তবে সেই আমলের সব গাছ এখন আর নেই। সব মিলিয়ে বাগানে এখন গাছ আছে সাড়ে ৩০০। এর বেশ কিছু গাছ অনেক বয়সী। কিন্তু তার কোনোটি সেই আদ্যিকালের বাগানের গাছ কি না, তা স্রেফ চোখে দেখে বলা সম্ভব নয়। বাগানটিও আর সেই আগের দিনের মতো নেই। হতশ্রী চেহারা। কাজলা নদীটিও তা-ই। এককালে হয়তো কাকচক্ষু জলের স্রোতস্বিনী ছিল। এখন হাজামজা। অপুষ্টিতে ভোগা শিশুদের মতো জীর্ণশীর্ণ।
কাজলার তীরের এই আমবাগানের মধ্যে ইউরোপীয় স্থাপত্যরীতির এক কুঠিবাড়ি। বাংলার ইতিহাসের মোড় ঘুরিয়ে দেওয়া এক ঘটনার নীরব সাক্ষী এই বাড়ি। এখানে বসেই একদা লর্ড ক্লাইভ আর মীর জাফর আলী খান ষড়যন্ত্রের নীলনকশা করেছিলেন নবাব সিরাজউদ্দৌলার বিরুদ্ধে। শোনা যায়, সিরাজের কুচক্রী খালা ঘষেটি বেগম আর সুযোগসন্ধানী অভিজাত-অমাত্যদের মধ্যে জগৎ শেঠ, রায়দুর্লভ, উমিচাঁদও ছিলেন তাঁদের সঙ্গে। লোকমুখে এখন বাড়িটির নাম ‘আমঝুপি কুঠি’। সম্প্রতি দুই সহকর্মীকে নিয়ে দেখে আসা হলো ঐতিহাসিক এই কুঠি।
মেহেরপুর শহর থেকে ছয় কিলোমিটার দক্ষিণে চুয়াডাঙ্গা যাওয়ার পথের ধারেই পড়ে আমঝুপি গ্রাম। গ্রামের নাম থেকেই কুঠিবাড়িটির নাম। এটি ছিল ব্রিটিশ নীলকরদের কুঠি। তবে আমবাগানটি নাকি তারও আগেকার। নবাব আলিবর্দী খান আমবাগানটি করেছিলেন এবং এখানে তিনি মাঝেমধ্যে আসতেন কাজলা নদী দিয়ে বজরায় করে।
নদীর পাড়ে দক্ষিণ দিকে মুখ করা বাড়িটি। বারান্দার সামনে নিচু প্রাচীর দিয়ে ঘেরা বাগান। তার ভেতর দিয়ে ধাপে ধাপে সিঁড়ি চলে গেছে একেবারে নদীর কিনার অবধি। নদীই ছিল তখন প্রধান যাতায়াতের পথ। সে কারণে বাড়ির সামনেই ঘাট। পূর্ব-পশ্চিমে লম্বা বাড়িটির একটি বৈশিষ্ট্য হলো, উত্তর দিক দিয়েও এর ভেতরে প্রবেশ করা যায়। এদিকটাতেও চমৎকার বারান্দা। তবে সিঁড়িটি সংগত কারণেই অত দীর্ঘ নয়। আর ফুলের বাগানের বদলে এদিকে আছে আমবাগান। এখন নদী শুকনো। তাই উত্তর দিকে আমবাগানের মধ্য দিয়েই পিচঢালা পথ। মেহেরপুর-চুয়াডাঙ্গা সড়ক থেকে এই পথ দিয়েই লোকে এখন গাড়ি নিয়ে সোজা চলে আসে আমঝুপি কুঠির সামনে।
মাঝখানে একটি বৃত্তাকার ঘর। তার সঙ্গে লাগোয়া লম্বা সরলরেখায় দুই দিকে আরও কয়েকটি ঘর। সব মিলিয়ে ঘর ১৪টি। দক্ষিণের বাগানের কিনার দিয়ে স্থলপদ্মের কয়েকটি ঝাড়। প্রচুর ফুল ফুটেছিল গাছগুলোয়। সচরাচর স্থলপদ্মের এমন ঝাড় চোখে পড়ে না। এ ছাড়া বারান্দার দুই পাশে আছে বেশ বড় দুটি ম্যাগনোলিয়া গ্র্যান্ডিফ্লোরার গাছ। আছে হলুদ ফুলে ফুলে ভরা এলামন্ডা, মধুমালতীর ঝাড়, গোলাপ, রঙ্গন, রজনীগন্ধাসহ সব মৌসুুমি ফুলগাছ আর নানা রকমের ক্যাকটাস। অভিশপ্ত নীল চাষের স্মৃতি মনে করিয়ে দিতেই যেন এক পাশে একটি বেশ বড়সড় নীলগাছ। বাগানটি ছোট, তবে যত্ন-পরিচর্যায় পরিপাটি।
আমঝুপিকুঠিতে এ ছাড়া বলতে গেলে প্রচলিত অর্থে দর্শনীয় আর তেমন কিছু নেই। আমবাগানের ভেতরে, নদীর পাড়ে পূর্বদিকে লোকজনের বসার জন্য কিছু কংক্রিটের বেঞ্চ আছে। বিকেলের দিকে স্থানীয় লোকজন সেখানে বসে গল্পগুজব করে সময় কাটান। শীতে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে গাড়ি নিয়ে পিকনিক করতে আসেন কেউ কেউ। তা ছাড়া সারা বছর দর্শনার্থীর সংখ্যা খুবই নগণ্য বলে জানালেন কুঠির তত্ত্বাবধানের দায়িত্বে থাকা বেল্লাল হোসেন। পাঁচ টাকার টিকিট কেটে কুঠির ভেতরে প্রবেশ করা যায়।
আমঝুপিকুঠি মেহেরপুর উপজেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে সরকারি রেস্ট হাউস হিসেবে ব্যবহূত হয়েছে আগে। বেল্লাল হোসেন জানালেন ২০০৫ সালে এটিকে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর প্রত্নসম্পদ হিসেবে ঘোষণা করে। তার পর থেকে আর রেস্ট হাউস হিসেবে ব্যবহূত হচ্ছে না। প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ একটি সাইনবোর্ড টাঙিয়েছে উত্তর দিকের বারান্দার পাশে। তবে কুঠির আর কোনো বিবরণ কোথাও লিখিত কিছু নেই। ভেতরে দর্শনীয় নিদর্শনও কিছু নেই। সে কারণে বেশির ভাগ সাধারণ মানুষের এর প্রতি তেমন আগ্রহ নেই। ‘কী আর দেখতে আসবে লোকে!—মন্তব্য বেল্লালের।
তবে একেবারেই যে কিছু নেই দেখার, তা মানা গেল না। এত বড় ঐতিহাসিক ঘটনার সাক্ষী বাড়িটি তো আছে! এবং তা বেশ ভালো অবস্থায়ই আছে। তা ছাড়া এই বিশাল আমবাগান, নদীর ওপাড়ে উদার আকাশের তলায় দিগন্ত ছুঁয়ে থাকা অবারিত ফসলের মাঠ আর শুধু পাখপাখালির ডাকে মুখর নিরিবিলি পরিবেশ—এসব কি দেখার মতো, মন ভালো করে দেওয়ার মতো কিছু নয়! চোখে চমক লাগানোর মতো কিছু নেই সত্যি, আমোদ-ফুর্তির উপকরণের অনুপস্থিতিও স্পষ্টই, তবু ইতিহাসের এত কাছ ঘেঁষে দাঁড়ানোর সুযোগটি তো অন্তত আছে। সর্বব্যাপী ইতিহাসবিমুখতা আর বিস্মৃতিপ্রবণতার এই সময়ে একি এক অনন্য সুযোগ নয়?

অক্টোবর ২৪, ২০১০

সুনামগঞ্জের টেংরাটিলায় পুকুরের গ্যাসে রান্না


 
গ্যাস ক্ষেত্র লাগোয়া বাড়ির পুকুর। অবিরাম গ্যাসের বুদ্বুদ্ উঠছে। পুকুরের এ গ্যাস চুলোয় নিয়ে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করছেন বাড়ির মালিক। সুনামগঞ্জের টেংরাটিলায় অগ্নি-দুর্ঘটনার সেই গ্যাস ক্ষেত্রের পাশের বাসিন্দা আবুল কাশেমের পুকুরের গ্যাস শুধু তাঁর ঘরের চুলায় নয়, আশপাশের কয়েকটি বাড়ি ও দোকানে ব্যবহার হচ্ছে অনেকটা বাণিজ্যিক কায়দায়। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ বা কোনো কারিগরি দক্ষতা ছাড়া প্রাকৃতিক গ্যাসের এ রকম ব্যবহার বিপজ্জনক হলেও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা রয়েছেন উদাসীন।
পুকুর থেকে সরবরাহ করা গ্যাস এলাকায় ‘কাশেম গ্যাস’ নামে প্রচার রয়েছে। গ্রাহকেরা সংযোগ নেওয়ার সময় একটি লিখিত অঙ্গীকারও করেন। তাতে লেখা—‘কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে সে জন্য কাশেম দায়ী না!’
দোয়ারাবাজার উপজেলার টেংরাটিলায় ছাতক (পশ্চিম) গ্যাস ক্ষেত্রে কানাডীয় জ্বালানি কোম্পানি নাইকো গ্যাস উত্তোলন শুরু করলে ২০০৫ সালের ৭ জানুয়ারি প্রথম দফা অগ্নিকাণ্ড হয়। এ আগুন প্রায় ১৫ দিন পর স্বাভাবিকভাবে নিয়ন্ত্রণে এলে আবার গ্যাস ক্ষেত্র খননকালে ছয় মাসের মাথায় একই বছরের ২৪ জুন দ্বিতীয় দফা অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এরপর থেকে উত্তোলনকাজ গুটিয়ে নাইকো চলে যায়।
এলাকাবাসী জানান, দুর্ঘটনার পর থেকে টেংরাটিলার বাড়িঘর, পুকুর, ফসলি জমি, রাস্তাঘাট দিয়ে গ্যাসের বুদ্বুদ্ উঠছে। জমিতে ঠিকমতো ফসল হয় না। আর বাড়ির পুকুরে মাছচাষও হয় না আগের মতো। সরেজমিনে দেখা গেছে, গ্যাসকূপ থেকে পুকুরের দূরত্ব প্রায় ৩০ থেকে ৪০ ফুট। দিনের ২৪ ঘণ্টাই পুকুরের পানিতে গ্যাসের বুদ্বুদ্ দেখে কাশেম নিজের কারিগরিতে প্রথমে নিজের চুলায় ব্যবহার শুরু করেন গত মার্চ মাস থেকে। পরে আশপাশের আরও ৩৪টি বাড়ি ও টেংরাবাজারের ১২টি দোকানে গ্যাস সরবরাহ করেন। পুকুরে সংযোগ পাইপ দিয়ে চারটি খুঁটি পুঁতে এবং তা প্লাস্টিকের পাইপলাইন দিয়ে বাড়ি বাড়ি সরবরাহ করা হচ্ছে।
আবুল কাশেম নিজে এ ধরনের কাজ নাইকোর খননকর্মীদের সঙ্গে থেকে শিখেছেন বলে দাবি করেন। তিনি জানান, পরিত্যক্ত গ্যাস ব্যবহার করার এ চিন্তাটি তাঁর নিজের কারিগরি দক্ষতা। পুকুরের পানির নিচে একটি বুদ্বুদের স্থানে পাকা বাক্স বসিয়ে একটি পাইপ টেনে দেন ঘরের চুলায়। সেটা চালু ও বন্ধ করার জন্য তিনি একটি সুইচও লাগান। লোকজনের চাপাচাপিতে তিনি তাদের সংযোগ দিতে বাধ্য হন। চুলা প্রতি ২০০ টাকা করে নিচ্ছেন বলে জানান তিনি।
কাশেম বলেন, ‘এত এত এক্সপার্ট সত্ত্বেও নাইকোর হাতেও তো দুর্ঘটনা ঘটল! আমার ক্ষেত্রে দুর্ঘটনার কোনো আশঙ্কা নেই বলে আমি মনে করি। কারণ পুকুর থেকে যে চারটি পাইপ দিয়ে লাইন টানা হয়েছে, তার প্রতিটিতেই নিয়ন্ত্রণ সুইচ আছে। গ্যাসের চাপ বাড়লে আউটলাইন করার ব্যবস্থাও রয়েছে।’
সিলেট অঞ্চলে গ্যাস সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান জালালাবাদ গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন (টি অ্যান্ড ডি সিস্টেম) সুনামগঞ্জ আঞ্চলিক কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক মো. ফজলুল হক বলেন, ‘মনগড়া কারিগরিতে গ্যাসের এমন অবাধ ব্যবহার অবৈধ। তবে নিজের বাড়ির পুকুরে বলে হয়তো এ সম্পর্কে তাঁদের কেউ জানায়নি। যেকোনো কাজই যথাযথ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে না হলে দুর্ঘটনার আশঙ্কা বা ঝুঁকি থাকেই। তবে আমাদের পর্যবেক্ষণে মনে হচ্ছে, টেংরাটিলায় এখন আগের মতো গ্যাসের চাপ নেই। তাই দুর্ঘটনার আশঙ্কাও কম।’
টেংরাটিলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফরিদ উদ্দিন আহমদ বলেন, ‘তাঁর ঘরেও “কাশেম গ্যাস” সংযোগ রয়েছে। গ্যাস ক্ষেত্রে অগ্নিকাণ্ডের পর পরিবেশ আগের মতো নেই। এলাকায় তীব্র জ্বালানির সংকট রয়েছে। একজনের ব্যক্তি-উদ্যোগে ওই সংকট কাটার একটা ব্যবস্থা হওয়ায় মানুষ উপকৃত হচ্ছে।’

অক্টোবর ২২, ২০১০

'মৃত' ঘোষণার ১৪ ঘন্টা পর বেঁচে উঠলেন লিডি

রোগিণীর অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে তাকে 'মৃত' বলে ঘোষণা করা হয়েছিল। কিন্তু ডাক্তারি মতে 'মৃত' সেই নারীই ফের 'বেঁচে' উঠলেন। তিনি জেগে উঠবেন, এই আশাতেই সাপোর্ট খুলে নেয়ার অনুমতি দেয়নি তার ছেলেরা।

ঘটনাটি ঘটেছে ফ্রান্সের বোর্দোর একটি হাসপাতালে। ৬০ বছরের ক্যান্সার আক্রান্ত লিডি পাইলার্ডকে কেমোথেরাপি দেয়ার জন্য হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছিল। তিনি হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে যান। তাকে ভেন্টিলেটরের সাহায্যে বাঁচিয়ে রাখা হয়। পরে চিকিৎসকরা জানিয়ে দেন, তিনি 'ডাক্তারি মতে' মৃত। কিন্তু লিডির ছেলেরা মাকে ভেণ্টিলেটর থেকে সরানোর প্রস্তাব খারিজ করে দেন। প্রায় ১৪ ঘণ্টা পর লিডির জ্ঞান ফিরে আসে। এক চিকিৎসকের মতে, এ এক ধরনের দৈব ঘটনা ছাড়া অন্য কিছু নয়। লিডি বলেছেন, একটা ইনজেকশন নেয়ার পর খুব অসুস্থ বোধ করেছিলাম। জ্ঞান ফেরার পর অনেক বেশি 'ক্লান্ত' লাগে। -খবর বর্তমান পত্রিকার

অক্টোবর ২১, ২০১০


অ্যানথ্রাক্স: আরো কিছু কথা

বর্তমানে অ্যানথ্রাক্স সবার কাছে একটি পরিচিত রোগ। জেলার পর জেলার গবাদিপশু ও মানুষে এ রোগ ছড়িয়ে পড়ার কারণে সরকার রেড এলার্ট জারি করেছিল। সম্প্রতি তা আবার তুলে নেওয়া হয়েছে। এদিকে কোরবানীর ঈদও আসন্ন। দেশের অধিকাংশ মানুষই গরু কোরবানী দিয়ে থাকেন। গত রমজানের ঈদে বাজারের দেখা গেছে ভিন্ন চেহারা। গরুর মাংসের বদলে বিক্রি হয়েছে মুরগি ও খাসির মাংস। তবে সুখবর হল অ্যানথ্রাক্স এখন নিয়ন্ত্রণে। ক্রমশ কমে আসছে গবাদিপশু ও রোগীর সংখ্যা। তারপরও কোরবানী ঈদকে ঘিরে মানুষের আতঙ্কটা রয়েই গেছে।

প্রাণিসম্পদ বিভাগের কাজের গতি এবং ভ্যাকসিন তৈরির পরিমাণ বৃদ্ধিতে রোগের প্রাদুর্ভাব কমে গেছে। তারপরও যারা গরুর মাংস খাওয়া নিয়ে আতঙ্কিত তাদের জন্য নিম্নোক্ত বিষয়গুলোর দিকে লক্ষ্য রাখলেই চলবে-

ক. চৎবংংঁৎব ঈড়ড়শবৎ -এ মাংস রান্না করলে অ্যানথ্রাক্সের জীবাণু ধ্বংস হয়ে যায়;

খ. অঁঃড়পষধাব দ্বারা রান্না করা মাংস জীবাণু মুক্ত থাকে;

গ. সিলভারের পাত্রের মুখ ঢাকনী দিয়ে ভালভাবে ঢেকে নিয়ে অধিক সময় পর্যন্ত তাপ দিতে হবে যাতে মাংস নরম বা মোলায়েম হয়। এ ক্ষেত্রেও জীবাণুর কোনো অস্তিত্ব থাকে না।

অ্যানথ্রাক্স পশুর জন্য জীবন হননকারী হলেও তা এখন নিয়ন্ত্রণে, তবে মানুষের জন্য এ রোগ মারাত্মক নয়। আগামী কোরবানীর ঈদে সবাই মাংস খাবেন বিনা সংকোচে এবং নির্ভয়ে। তবে গরুটি হতে হবে ভেটেরিনারি সার্জন কতৃর্ক পরীক্ষিত।

ডাঃ মোঃ ফজলুল হক
সহযোগী অধ্যাপক ও বিভাগীয় চেয়ারম্যান
মেডিসিন, সার্জারি এন্ড অবস্টেট্রিক্স বিভাগ
হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, দিনাজপুর

সূত্রঃ দৈনিক ইত্তেফাক (অক্টোবর ১৭, ২০১০)